প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। আপনি যদি লোন নিতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে বুঝতে পারবেন কিভাবে লোন নিতে হয়।
আপনি হয়তো জানেন যে অনন্য ব্যাংকের তুলনায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা দেয় লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং সুদের হার অনেক কম। কিন্তু কিভাবে এই ব্যাংক থেকে লোন নেয়া যায়? সে সম্পর্কে অনেকের তেমন কোনো ধারণা নাই। মূলত আজকের আলোচনা করা হবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর সমস্ত লোন সেবা সম্পর্কে এবং কিভাবে লোন নিবেন, ব্যাংক লোন ফরম কোথায় পাবেন, সুদের হার কত, করা এই লোন নিতে পারবে ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে ।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৩
আপনি বিভিন্ন খাতে লোন নিতে পারবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বেশ কয়েকটি খাতে সল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ / লোন দিয়ে থাকে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের একজন গ্রাহক হিসাবে নিম্নের খাতসমূহ-তে লোন নিতে পারবেন —
- অভিবাসী ঋণ প্রদান
- পূনর্বাসন ঋণ
- বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ
- বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ
- আত্মকর্মসংস্থানমূলক ঋণ
- নারী অভিবাসী ঋণ
- নারী পুনর্বাসন ঋণ
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সাধারণ ঋণ
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ
ঋণ পরিমাণ: একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০.০০ ( পঞ্চাশ ) লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবে।
জামানতবিহীন ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩.০০ ( তিন ) লক্ষ টাকা।
৩.০০ ( তিন ) লক্ষ টাকার উর্ধ্বে হলে ঋণের ক্ষেত্রে জামানত রাখতে হবে।
ঋণের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ ( দশ ) বছর।
সুদের হারঃ ঋণ গ্রহীতা যদি পুরুষ হয় সেক্ষেত্রে ৯ % এবং মহিলা হলে সেক্ষেত্রে ৭ % সরল সুদ হারে।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ গ্রহণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও যোগ্যতাঃ
- ব্যাংক কর্তৃক সরবরাহকৃত নির্ধারিত আবেদন ফরমে মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা ০৩ ( তিন ) কপি ছবি।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি/পাসপোর্ট এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা সম্বলিত পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ/ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র।
- গ্যারান্টরের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ০২ ( দুই ) কপি ছবি।
- ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি ( প্রযোজ্য ক্ষেত্রে )
- অভিজ্ঞতা / প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ) এছাড়াও আরো ডকুমেন্টস প্রয়োজন হতে পারে।
অভিবাসী ঋণ প্রদান
বিদেশগামী কর্মীদের জন্য সহজ শর্তে জামানতবিহীন অভিবাসন ঋণ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- ব্যাংক কর্তৃক সরবরাহকৃত নির্ধারিত আবেদন ফরমে মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনকারীর ০৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা সহ পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র।
- আবেদনকারীর ভিসার ফটোকপি, পাসপোর্ট ফটোকপি এবং লেবার কন্ট্রাক্ট পেপার ( যদি থাকে)
লোনের পরিমাণ—
নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লোন নিতে পারবেন তিন লক্ষ টাকা।
রি - এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লোন নিতে পারবেন দুই লক্ষ টাকা।
ঋণের পরিশোধের সময়সীমা—
নতুন ভিসার ক্ষেত্রে লোন পরিশোধের সর্বোচ্চ মেয়াদ তিন বছর
রি - এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে লোন পরিশোধের সর্বোচ্চ মেয়াদ দুই বছর।
লোন প্রাপ্তি পরে প্রথম ২ মাস বাদ দিয়ে পরবর্তীতে মাসিক কিস্তিতে লোনের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
প্রায় সকল খাতে ঋণের জন্য এসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। আপনার প্রয়োজনীয় খাতে লোন নেওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যোগাযোগ করুন তারা আপনাকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহয়গিতা করবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুবিধা
- লোন ধরণ অনুযায়ী কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।
- এ ব্যাংক থেকে ঋণের কোন সার্ভিস চার্জ নেই।
- যথাযথ ডকুমেন্টস সহ আবেদন প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে লোন দিয়ে থাকে।
- ২ বছর থেকে ১০ বছর মেয়াদি ঋণ প্রদান করে।
- অনন্য ব্যাংকের তুলনায় সুদের হার কম।
আশা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোনের জন্য আবেদন, লোনের পরিমাণ, সুদের হার, লোন পরিশোধের সময়সীমা, কি কি বিষয়ে লোন নিতে পারবেন ইত্যাদি সম্পর্কে আপনি ধারণা পেয়েছেন।